২০০৭ সাল। দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়েছিল প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। নতুন ফরম্যাট, নতুন উত্তেজনা। আর সেই প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারতীয় দল, মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে। সেই জয় ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে শুধু এক স্মরণীয় মুহূর্তই ছিল না, ছিল এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
পরের বছর, ২০০৮-এ, সেই অধ্যায়ের পরবর্তী ধাপে আত্মপ্রকাশ করল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। আটটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে শুরু হওয়া এই লিগ যে এত দ্রুত বিশ্ব ক্রিকেটে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, তা কেউই কল্পনা করতে পারেনি।
ক্রিকেটের সঙ্গে বিনোদনের মেলবন্ধন, বিপুল প্রচার, আর্থিক বিনিয়োগ, তারকা ক্রিকেটারদের উপস্থিতি—সবকিছু মিলে এক বিশাল মঞ্চ হয়ে উঠল আইপিএল। শুধু ভারতের দর্শকদের মন জয় করেনি এই টুর্নামেন্ট, বিশ্বের সেরা ক্রিকেটাররাও এই লিগে নাম লেখাতে শুরু করলেন। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ—সব দেশ থেকেই ক্রিকেটাররা এলেন, আইপিএলের হয়ে খেলতে।
আইপিএলের এই জনপ্রিয়তায় ছায়া ফেলতে পারেনি ম্যাচ ফিক্সিংয়ের বিতর্কও। সময় এসেছে যখন একাধিক বড় নাম জড়িয়ে পড়েছিল অনৈতিকতায়, তবুও আইপিএলের জনপ্রিয়তা একটুও টাল খায়নি। বরং, সময়ের সঙ্গে আরও পোক্ত হয়েছে তার ভিত্তি।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, আইপিএল বদলে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেটের অর্থনৈতিক কাঠামো। বিসিসিআই হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ক্রিকেট বোর্ড। আর তার পাশাপাশি উঠে এসেছে নতুন প্রতিভা—হার্দিক পান্ডিয়া, জসপ্রীত বুমরা, ঋষভ পন্থের মতো তারকারা। ঘরোয়া ক্রিকেটে তারা যেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছেন, তার অন্যতম বড় মঞ্চ ছিল এই আইপিএলই।
আজ ১৭ বছর পর, আইপিএল শুধু একটা ক্রিকেট টুর্নামেন্ট নয়—এটা একটা সংস্কৃতি, যা ভারতীয় ক্রীড়াজগতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।
