নতুন বছরের প্রথম দিনে, পয়লা জানুয়ারি, কলকাতার নিউটাউনের সোলার ডোম মিউজিয়াম ঘুরে দেখার এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হলো। সম্পূর্ণ সোলার পাওয়ার দ্বারা চালিত এই মিউজিয়ামটি বিজ্ঞান, পরিবেশ এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি আধুনিক কেন্দ্র। এটি একদিকে যেমন বিজ্ঞানমনস্ক দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয়, তেমনই পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে বিশেষভাবে কার্যকর।
সোলার ডোম মিউজিয়ামের সময়সূচী ও টিকিট মূল্য
- সময়: সোমবার বাদে প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬:৩০ পর্যন্ত খোলা।
- টিকিট মূল্য: ₹২০০।
- ইকো পার্কের প্রবেশ টিকিট: সোলার ডোমে প্রবেশ করতে হলে আগে ইকো পার্কে ঢোকার জন্য ₹৩০-এর টিকিট কাটা বাধ্যতামূলক।
সোলার ডোমে কী দেখবেন?
১. পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির গুরুত্ব
মিউজিয়ামে ডিটেইলসে ব্যাখ্যা করা হয়েছে কীভাবে সূর্যের আলো, বায়ু, এবং সমুদ্রের ঢেউ থেকে ক্লিন এনার্জি উৎপন্ন করা যায়।
- একটি তথ্য যা অবাক করে:
“এক ঘণ্টার সোলার এনার্জি পুরো পৃথিবীর এক বছরের শক্তির চাহিদা মেটাতে পারে।” - আরও একটি চমকপ্রদ তথ্য:
“পৃথিবীর মাত্র ০.১% ভূ-তাপীয় শক্তি ২০ লক্ষ বছর ধরে মানবজাতির শক্তির প্রয়োজন মেটাতে পারে।”
২. পরিবেশের অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি
- পরিবেশের ক্ষতির মডেল:
মানুষ কীভাবে পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং কতগুলো প্রাণী এক্সটিংক্ট হয়ে গেছে, তা অত্যন্ত বাস্তবসম্মত মডেলের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। - দূষিত শহরগুলোর তালিকা এবং সমুদ্রের জলে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনাযুক্ত শহরগুলোর বর্ণনা।
৩. ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি ও নগর পরিকল্পনা
- থ্রি-ডি ভিডিও শো:
ভবিষ্যতের শহর এবং যানবাহন কেমন হবে, তা দেখানো হয়েছে। - দুটো বড় হলে পরিবেশ সচেতনতার উপর অনবরত শো চলছে।
৪. বিজ্ঞানের বিভিন্ন মডেল ও কুইজ
- তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হাইড্রো ইলেকট্রিক কেন্দ্র এবং উইন্ড এনার্জির কেন্দ্রের মডেলের মাধ্যমে শক্তি উৎপাদনের পদ্ধতি বিশদে তুলে ধরা হয়েছে।
- বিখ্যাত বিজ্ঞানীদের মডেল এবং তাঁদের অবদানের সহজবোধ্য ব্যাখ্যা।
- দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় কুইজ এবং গেম যা ছোট থেকে বড় সকলের মন জয় করবে।
সুবিধা ও অসুবিধা
- সুবিধা:
- একদম উপরে একটি সুন্দর ক্যাফেটেরিয়া।
- সোলার এনার্জির দ্বারা চালিত বিভিন্ন প্রোডাক্ট (যেমন লাইট ও টেবিল ল্যাম্প) কেনার ব্যবস্থা।
- মিউজিয়ামটি ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন হতে সাহায্য করে।
- অসুবিধা:
- মিউজিয়ামের ভিতরে কোনো টয়লেট নেই। টয়লেট ব্যবহারের জন্য ইকো পার্কে ফিরে যেতে হবে।
আমাদের গর্ব
সোলার ডোমে ঘুরে এসে ভারতবর্ষের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের অগ্রগতি দেখে গর্ব অনুভব হবে। এটি শুধু একটি মিউজিয়াম নয়, বরং ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে আরও সবুজ ও পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
ভ্রমণের জন্য টিপস
- পুরো মিউজিয়ামটি ঘুরে দেখতে একদিন সময় দিন।
- পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য এটি একটি আদর্শ জায়গা।
- পরিবেশ সচেতন হতে এবং ভবিষ্যৎ শক্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে জানার জন্য সোলার ডোমে অবশ্যই একবার ঘুরে আসুন।
আপনার ভ্রমণকে উপভোগ্য এবং শিক্ষামূলক করতে সোলার ডোম মিউজিয়াম একটি আদর্শ গন্তব্য। পরিবেশ এবং বিজ্ঞানকে ভালোবাসুন, পৃথিবীকে বাঁচান।
তথ্য ও ছবি : গৌরাঙ্গ মালাকার
