” কলকাতা ” – নামে যে শহরটাকে আমরা চিনি সেই শহরটার নামের পেছনেও রয়েছে একটা ইতিহাস। কেউ কেউ আবার বলে থাকেন- কলকাতার নামের পেছনে যে কি রহস্য রয়েছে সেটা এখনও পর্যন্ত উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়নি।
এখন যেটা ” কলকাতা ” সেটার পুরনো নাম ছিল ” ক্যালকাটা ” (Calcutta)। বলা হয় যে ক্যালকাটা নামটা এসেছে “কলিকাতা/কালিকাতা” থেকে। ” ক্যালকাটা” নামটা হলো এই বাংলা ভাষাতে থাকা “কলিকাতা/কালিকাতা” ইংরেজি উচ্চারণ। ইংরেজরা “কলিকাতা/কালিকাতা” ক্যালকাটা বলতো। সেখান থেকেই এই নামের উৎপত্তি বলে অনেকে মনে করেন। “কলিকাতা/কালিকাতা” শব্দটা এসেছে ” কালিক্ষেত্র ” থেকে। ” কালিক্ষেত্র ” হলো যেখানে দেবী কালী বিরাজমান।
আবার অনেকে বলে যে এই নামটা এসেছে “খাল” ( Khal) থেকে। “খাল” ( Khal ) এর ইংরেজি হলো “ক্যানাল” ( Canal )। কারণ এই শহরটা খালের ওপর অবস্থিত।
আরও অনেকে বলে যে এই শহরটার নামটা এসেছে লাইম ( Lime ) এবং বার্নট শেল ( Burnt Shell ) – এর বাংলা প্রতিশব্দ থেকে। লাইম হলো ক্যালসিয়াম অক্সাইড, বাংলাতে কালি এবং বার্ণট শেল হলো বাংলাতে কাটা – ” কালিকাটা ” । এই এলাকায় চুন উৎপাদন করা হত।
আরও শোনা যায়, ইংরেজরা যখন কলিকাত, গোবিন্দপুর ও সুতানুটি- এই তিনটে গ্রামের ওপরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে নেয় তখন তারা তিনটে গ্রামকে একসঙ্গে করে দেয় এবং নাম দেয় “কলিকাতা/কালিকাতা” (Kalikata)। এটা ছিল ইংরেজদের একটা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি। দক্ষিণ ভারতের “ক্যালিকট” থেকে “ক্যালিকোতে” পর্তুগীজ বাণিজ্যের সাথে প্রতিযোগিতা করার জন্য ব্রিটিশরা এরকম ফন্দি করেছিল। তাঁরা তাদের রপ্তানি পণ্য সামগ্রীর ওপরে ” কলিকাতা/কালিকাতা ” স্ট্যাম্প মেরে “ক্যালিকট” – এর পণ্য প্রচার করে বিক্রি করতো।
এছাড়াও কিছুজন বলে, “কলিকাতা/কালিকাতা” নামটা এসেছে একটা ভুল কথপোকথনের জন্য। একবার, একজন ইংরেজ একজন স্থানীয়কে ( যে ঘাস কাটত) জিজ্ঞেস করে যে এই এলাকার/গ্রামের নাম কি। সেই লোকটা ইংরেজি জানে না। সে ভাবলো জিজ্ঞেস করছে “ঘাস কবেকার কাটা?” তখন সে উত্তর দেয়- ” কাল- কাটা।”
ক্যালকাটা ছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানি শহর। ১৭৭২ সালে এই শহরটাকে ব্রিটিশরা ভারতের রাজধানি ঘোষণা করে। ১৭৭২ সাল থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত ক্যালকাটা ছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানি। পরে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ২০০১ সালের ১লা জানুয়ারি ক্যালকাটা নাম পালটে সরকারিভাবে ভাবে কলকাতা রাখা হয়।
