গত ২২ মার্চ স্থানীয় সাইবার ক্যাফে থেকে অনলাইনে নতুন পাসপোর্টের আবেদন করেন চিৎপুর থানা এলাকার বাসিন্দা শাহনাওয়াজ খান। আনন্দপুরের পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে তাঁর ব্যক্তিগত কাগজপত্র যাচাই হয় ২৭ মার্চ, এবং ২৯ মার্চ ইমেল মারফত শাহনাওয়াজ জানতে পারেন, তাঁর পাসপোর্ট পাঠানো হয়েছে আবেদনপত্রে লেখা ঠিকানায়।
এই পর্যন্ত সব ঠিক ছিল, কিন্তু বিপত্তি ঘটে পরের দিন সকালে। শাহনাওয়াজের কাছে ফোন আসে একটি অজানা নম্বর থেকে, এবং অপরপ্রান্তের ব্যক্তির বক্তব্যের সারমর্ম, ‘আমি পোস্টাল হেড অফিস থেকে কল করছি, আপনার ঠিকানায় আমাদের লোক আপনার পাসপোর্ট পৌঁছে দিতে পারেননি।’
শোনামাত্রই কাতর হয়ে পড়েন শাহনাওয়াজ। কী করলে পাসপোর্ট হাতে পাবেন তবে? শাহনাওয়াজের কথাবার্তায় স্পষ্ট উদ্বেগের সুর শুনে সে ব্যক্তি জানায়, পাসপোর্ট পেতে হলে ডেলিভারি চার্জ বাবদ ৫ টাকা অনলাইনে পাঠাতে হবে, সঙ্গে সঙ্গে পেমেন্ট লিঙ্ক-ও পাঠিয়ে দেয় সে, যে লিঙ্কে ক্লিক করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ টাকা পাঠিয়ে দেন শাহনাওয়াজ।
সেদিন বিকেলেই পাসপোর্ট পেয়ে যান তিনি, যার ফলে তাঁর মনে বিশ্বাস জন্মায়, সকালের সেই ব্যক্তি সত্যি কথাই বলছিল। একবারও একথা মনে আসে না যে হয়তো স্বাভাবিক নিয়মেই পাসপোর্ট পেয়েছেন, এমনিতেও সেদিনই পেতেন। সেকথা মনে এল, তবে বড় রকমের ধাক্কা খেয়ে, যখন ৩১ মার্চ সকালে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে দুই কিস্তিতে উধাও হয়ে গেল প্রায় ৯০ হাজার টাকা।
চিৎপুর থানা হয়ে অভিযোগ নিয়ে শাহনওয়াজ পৌঁছন নর্থ ও নর্থ সাবার্বান ডিভিশনের সাইবার শাখায়। অভিযোগ পাওয়া মাত্র তদন্তে নেমে সাব-ইনস্পেক্টর প্রিয়াঙ্ক মণ্ডল প্রথমেই জেনে নেন, শাহনাওয়াজের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কোন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে গেছে। এর পর যোগাযোগ করেন সেই ব্যাঙ্কের সঙ্গে, এবং ‘ফ্রীজ’ করিয়ে দেন টাকা সহ অ্যাকাউন্ট, এবং তারও পরে ব্যবস্থা করেন খোয়া যাওয়া টাকা অ্যাকাউন্টে ফেরানোর। বলা বাহুল্য, টাকা ফেরত পাবেন এমন আশা করেননি শাহনাওয়াজ, সুতরাং পুরো টাকা ফেরত পেয়ে কৃতজ্ঞতায় অভিভূত তিনি।
তথ্য : কলকাতা পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়া