দমদমে মাটির তলা থেকে বের করা হল আস্ত একটি কামান। এতদিন অবহেলায় পড়েছিল মাটির নীচে। কিছুটা অংশ দেখাও যেত। কিন্তু দেখেও যেন দেখতেন না কেউ। তবে ইতিহাস পিপাসুদের কাছে আকর্ষণীয় ছিল এই কামান। মনে করা হচ্ছে ১৭৭০ সালে কামানটি তৈরি করা হয়েছিল। ৬টন ওজনের এই কামানটি ১৮ কেজি ওজনের গোলা ১২০০ থেকে ১৫০০ গজ দূরে ছুঁড়তে পারে।
আধুনিক অস্ত্রের তুলনায় হয়তো এই পাল্লা কিছুই নয়। কিন্তু তবুও কলকাতার মাটির নীচে থমকে থাকা ইতিহাস যেন এদিন আচমকাই কথা বলে ওঠে। প্রায় ২৫০ বছর ধরে মাটির তলায় চাপা পড়েছিল যে ইতিহাস তা সামনে এল এতদিন পরে। প্রায় ১৫দিনের চেষ্টায় এদিন সেই কামানটিকে খুঁড়ে বের করা হয়।
দমদম সেন্ট্রাল জেলের কাছেই যশোর রোডের মোড়ে এই কামানটিকে মাটি খুঁড়ে বের করা হয়। দমদম পুরসভা, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট ও সিইএসসি এই কামান তুলতে সহযোগিতা করে। এদিন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও অ্য়াডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্য়ান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল বিপ্লব রায় উপস্থিত ছিলেন।কিন্তু দমদমে যশোর রোডের ধারে কীভাবে কামানটি এল,মনে করা হচ্ছে এখান থেকে ক্লাইভ হাউজের দূরত্ব প্রায় ১ কিমি। সম্ভবত কামানটি যুদ্ধের কাজে লাগানো হয়েছিল। পরে দমদম সেন্ট্রাল জেলে ঢোকার মুখে সেটি রাখা হয়েছিল। পরে সেখানে জঞ্জাল ফেলে ভরতি করে ফেলা হয়েছিল। তবে এই কামানটি আপাতত কলকাতা হাইকোর্টের জুডিশিয়াল মিউজিয়াম অ্য়ান্ড রিসার্চ সেন্টারে পাঠানো হবে বলে সূত্রের খবর। কারণ এটা আপাতত আদালতের সম্পত্তি। পরবর্তী সময়ে এটি অনুমতি সাপেক্ষে অন্যত্র সংরক্ষণ করা হতে পারে।
এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের দাবি, কলকাতায় মাটির নীচে এরকম একাধিক কামান থাকতে পারে। সেগুলিও ধাপে ধাপে খুঁড়ে বের করা হতে পারে। তবে এদিন চোখের সামনে এত বড় কামান দেখে অবাক হয়ে যান অনেকেই। এতদিনের পরিশ্রম কার্যত সফল।
এতদিন কামানটির এক ফুট মাটির উপরে ছিল। বাকি ৯ ফুট ৮ ইঞ্চি ছিল মাটির নীচে। সবটাই এবার খুঁড়ে বের করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই কামানটি ব্রিটিশদের তৈরি। ১৭৬৩ সালে এটি নকশা করা হয়েছিল। বিপ্লব রায় জানিয়েছেন, প্রচুর কামান কলকাতার রাজপথের নীচে রয়েছে। আজ এক আনন্দের দিন। রবার্ট ক্লাইভের বাড়ি থেকে কাছে কামান উদ্ধার হল।