স্বর্ণভো মজুমদার: ” দাদা, এটা কি হাওয়া র লাইন… ?? ” ভদ্রলোক যখন হ্যাঁ বলে নিশ্চিত করলেন তখন ঘড়িতে বাজে দুপুর আড়াইটে আর ‘ হাওয়া ‘ র প্রদর্শন শুরু সন্ধ্যে ৬ টায়। সামনে লম্বা লাইন, হাওয়া গরম। আমি আর আমার এক বন্ধু দাড়িয়ে পড়লাম। এই না হলে চলচ্চিত্র উৎসব? টিকেট কেটে হলে ঢুকে দেখে নিলে এই রোমাঞ্চ টা অনুভব করা হতো কি ? সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর যখন প্রথম থেকে তিন নম্বর শারি র কর্নার সিট দুটো দখল করতে পারলাম, উফ সে এক বন্য আনন্দ। এবার আর মিনিট দশেক, তারপর শুধু ‘ হাওয়া ‘ ।
ছবি শুরু হলো, হাউস ফুল। বাকি দর্শক আসন না পেয়ে মাটিতেই বসে পড়েছেন। ‘ হাওয়া ‘ এই ছবিটি সোজা যেনো ব্যস্ত শহর থকে টান মেরে ছুঁড়ে ফেলে দেয় মাঝ সমুদ্রে। ওহ! কতই না রহস্য সে সমুদ্রের বুকে। চান মাঝি চলেছে বাকি মাঝি দের নিয়ে বড়ো নৌকা করে মাছ ধরতে। সেই যে তাদের খুনসুটি, সেই যে বর্ষার রাতে অন্ধকার জলে রাত্রি যাপন, সেই যে তাদের আমোদ আহ্লাদের গান, সব মিলিয়ে এক অন্য দুনিয়া তে নিয়ে চলে যান পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন। কিন্তু একি কাণ্ড ? মাছ ধরতে গিয়ে জলে ধরা দিল এক নারী র মৃত দেহ ? না না , এ যে বেঁচে আছে। অমন ফুটফুটে মেয়ে টা.. জলে ডুবে গেছিলো ? কেউ মেরে সমুদ্রে ফেলে দিল ? নাকি সব ভ্রম? অনেক প্রশ্ন, অনেক রহস্য এই সমুদ্রের হাওয়ায়। সব মিলিয়ে ‘ হাওয়া ‘ এক অদ্ভুত সুন্দর পরিবেশ, থুড়ি সিনেমা। চান মাঝি র চরিত্রে চঞ্চল চৌধুরী অনবদ্য। শুধু অনবদ্য বলে সাধ মিটছে না, আর কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা আপাতত।
শো শেষ হলে, আলো জ্বলে উঠলো, মঞ্চে উঠে এলেন এক ভদ্র লোক, একদম সুটেড বুটেড। খুব চেনা চেনা লাগছে , কিন্তু। দর্শকের হাততালি তে ঘোর কাটলো। আরে চঞ্চল বাবু যে, এতক্ষন চান মাঝি র ভং ধরেছিলেন, চিনতেই পারিনি।